শেষ নিঃশ্বাস

শেষ নিঃশ্বাস

বিজয় মিত্র 

new bangla story
শেষ নিঃশ্বাস



Characters 
1.ঠাম্মা/জয়া 
2. আলো (১৮)
3. জয়ার বাবা, মা, ছোট ছেলে
4. শশুর, শাশুড়ি
5. এক বৃদ্ধ
6. পোস্টম্যান


Scene-1
Morning, বাড়ি 

আলো রান্না করছে

ঠাম্মা
কি রে আলুরদম হয়েছে? এরপরে তো লুচি গুলো ভাজতে হবে না। খোকা যে এখুনি এসে পড়বে

আলো
আরে না গো ঠাম্মা,তোমার ছেলের আসতে এখনও অনেক সময় বাকি, এখনও ৪ ঘন্টা বাকি। বাবা রে বাবা ছেলের জন্য বুঝি বুড়ির তোর সইছে না। 

ঠাম্মা
কি করে সইবে বল, সেই কবে বিদেশে গেছে কাজ করতে। পাঁচবছর হয়ে গেল, কতবার বলেছে মা আমি আসছি কিন্তু আসেনি !

আলো
আচ্ছা ঠাম্মা তোমার ছেলে বুঝি বিদেশে খেতে পায় না !

ঠাম্মা
কেন,খেতে কেন পাবে না ?

আলো
না ,ওই, ছেলের জন্য আলুরদম, লুচি,ছোলার ডাল,ইলিশ মাছের ঝোল, ভাত এত কিছু রান্না করছো তাই জিজ্ঞেস করলাম !

ঠাম্মা
পাগলী মেয়ে, সেতো করতেই হবে। আমার ছেলে আসছে এটা কি চারটে খানি ব্যাপার। অবশ্য তুই এখন বুঝবি না। যখন তুই মা হবি, তোর কোল আলো করে একটা ফুটফুটে বাচ্চা আসবে, তখন বুঝবি..

আলো
দূর আমি বিয়েই করব না !

ঠাম্মা
থাক, ও বিয়ের আগে সবাই এরকম বলে। 

আলো
আচ্ছা তাহলে কি আপনিও বিয়ের আগে এই রকমই বলতেন !

ঠাম্মা
আমি???

Flashback

Scene-2
জয়া/ ঠাম্মা, বাড়ি

বাবা 
কই গো জয়ার মা কোথায় আছো, আরে এসো এসো তাড়াতাড়ি এসো !

মা
কোথায় যাবো ? বাইরে থেকে আসার সাথে সাথে, শুধু জয়ার মা আর জয়ার মা। বলি একটু ধীরে সস্তিতে বলতে পারো না !

বাবা
ওরে বাবা, এতো দেখছি গিন্নি রেগে একবারে বোম হয়ে আছে !

মা
থাক আর আদিখেতা করতে হবে না। বলি তোমার মেয়ে সারাদিন পাড়ায় খেলে খেলে বেড়ায়, একটু ঘরের কাজে সাহায্য ও করতে পারে। যত হয়ছে আমার জালা !

বাবা
আরে বাবা, এই বয়সে সবাই যে এরকমই করে। যখন তোমাকে বিয়ের জন্য দেখতে গিয়েছিলাম, তখন তুমি কোথায় ছিলে মনে পড়ে.. পাত্রী দেখতে গেলাম ঘরে, পাত্রী কি না বাঁধের ঘাটে বসে মাছ ধরছে ! ( হাসে )

মা
হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক আছে ঠিক আছে। এবার বলো কি যেন বলছিলে !

বাবা
জয়ার জন্য একটা ভালো সম্বন্ধ পেয়েছি গো। ভাবছি সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসে একটা ভালো দিন দেখে মেয়েটার বিয়ে দিয়ে দেব। 

মা
কি বলছ গো? জানা নেই, শোনা নেয়, হুট করে মেয়েটা বিয়ে দিয়ে দেবে !

বাবা
আরে ধুর, আগে পুরো কথাটা তা শুনবে তো । আমার স্কুলের বন্ধু নিলয় সে বলছিল তার ছেলের বিয়ের জন্য একটা পাত্রী খুঁজেছে। ছেলেটা দেখতে শুনতে ভালো। তাদের নিজের মুদির দোকান ও আছে। তাই আমি তাকে বললাম কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, পাত্রী আমার ঘরে আছে, মানে আমার মেয়ে জয়া, তোরা এসে একবার দেখ যা, তারপর না হয় কথাবার্তা এগোনো যাবে !

মা
ও এই কথা,.. তা কবে আসছে !


বাবা
কাল কে

মা
কালকেই ! (দুঃখে ) ওগো মেয়েটা বিয়ে হয়ে যাবে এই ঘরটা যে একবারে ফাঁকা হয়ে যাবে  ! 

বাবা
হ্যাঁ সে আর কি করা যাবে। জয়া কে এলে বলে দিও কালকে যেন কোথাও না যায় !

( হুট করে জয়া এসে বলে)

ঠাম্মা/জয়া
আমি বিয়ে করব না। যদি এই বাড়িতে কেও আসে তাহলে আমি তাদের ঠ্যাং ভেঙে দেব !

Cut to 

Present 

Scene-3

আলো 
(লুচি ভাজতে ভাজতে)
Haha haha, ঠ্যাং ভেঙে দেব ? হা হা হা হা, ও ঠাম্মা কোটা ঠ্যাং ভেঙে ছিলে গো ?

ঠাম্মা
দূর পাগলী,.. ও রকম হয় নাকি। তারপরের দিন আমার শ্বশুরমশাই, শ্বাশুড়ি মা, মামা শ্বশুর আর তোর দাদু আমাকে দেখতে এসেছিল। 

Cut to 

Flashback 


(জয়া, বাবা, মা, ছেলে ও তার বাবা মা, মা শশুর বসে আছে)


শশুর/নিলয়
বুঝলে লক্ষ্মীকান্ত, তোর মেয়েকে আমাদের সকলের খুব পছন্দ হয়েছে.. 

বাবা/লক্ষ্মীকান্ত
(মজা করে)
হ্যাঁ সেতো বুঝলাম, কিন্তু আমি কোন পন দিতে পারব না। এ আমি আগেই থেকেই বলে রাখলাম, হ্যাঁ, হা হা হা। ..

শশুর
(মজা করে)
পণ? আমার কি মাথা খারাপ এতো সুন্দর লক্ষ্মীর মত মেয়ের জন্য পণ নিতে যাবো। আমার তো মনে হয় আমকেই উল্টে পণ দেওয়া দরকার। 

বাবা
হ্যাঁ সেটাই ভালো, মানে তাহলে একটা ভালো দিন দেখে বিয়ের দিন পাকা করলেই হলো !

শশুর
কি বলছিস, ভালো দিন দেখতে হবে. আমি ভাবছিলাম আজকেই দুজনের বিয়ে দিয়ে আমার বৌমাকে আমাদের সাথে নিয়ে যাবো।

মা
ঠিক আছে তাহলে একটা পুরোহিত ডেকে আনি !

শশুর
( হেসে ) কি ! এতো দেখছি বেয়ান আমার থেকে ও এক পা এগিয়ে হা হা হা হা !

Cut to 

Present 

Scene-4

ঠাম্মা 
এভাবেই আমার বিয়ের সম্বন্ধ পাকা হয়ে যায়। আর মাসখানের মধ্য আমার বিয়ে হয়ে যায়। তার পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আমার কোল আলো করে এলো আমার সন্তান.. উজ্জ্বল

Flashback 

Cut to

Scene-5

বাপের বাড়ি

(বাচ্চা শুয়ে শুয়ে কাঁদছে কিন্তু জয়া ওকে কিছুতেই চুপ করাতে পারছে না)

(বাচ্চার কান্না)

জয়া
চুপ হয়ে যা.. কাঁদে না সোনা কাঁদে না.. চুপ হয়ে যায় ! 

(বাচ্চার কান্না)

জয়া
দূর, সারাক্ষণ শুধু কান্না আর কান্না.. চুপ হতেই চায়ছে না

(মা আসে)

মা
কি রে খোকা কাঁদছে কেন? 

জয়া
আমি কি করে বলবো, ওর মন হলে হাঁসে, আবার মন হলে কাঁদে।

মা
শুধু মা হয়েছিস কিন্তু এখনো কিছুই শেখিস নি !

জয়া
দূর ভাল লাগে না। সারাক্ষণ শুধু কান্না আর কান্না। রাত হলে বেশ মজা করে ঘুমোবে। আবার দিন হলেই কান্না, যত হয়ছে আমার জালা !

মা
ও তাহলে তুই বুঝি না কেঁদেই বড় হয় গেছিস। ওরে পাগলী, মা হওয়া কি চারটে খানি ব্যাপার। ওকে কোলে তুলে ভালোভাবে আদর কর। দেখবি ঠিক চুপ হয়ে যাবে !

জয়া
(ছেলে কে কোল তুলে)
কি রে এখনো কাঁদবি,.. দেখ দেখ, এই তোর জন্য আমার মা আমাকে কেমন কথা শোনাচ্ছে।

Cut to

Present 

Scene-6

আলো 
( ছোলার ডাল বানাচ্ছে )
( হেসে ) ভারী মজা তো, ও ঠাম্মা তোমার ছেলের কান্না থেমে ছিল ?

ঠাম্মা
হ্যাঁ রে হ্যাঁ, তখন থামনি কিন্তু পরে থেমে গেছিল। আর  আমাকে দেখে মুচকি হাঁসছিল। এই তোর রান্নাটা কত দূর হলো ?

আলো
আরে বাবা তোমার ছেলের আসার আগে সব হয়ে যাবে। একটু সবুর করো।  তারপর কি হলো বোলো। 

ঠাম্মা
তারপর? তারপর যা হলো, আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি তখন আমার শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। আমাদের গ্রামে গত দু দিন ধরে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল।

Cut to
Flashback 

Scene-7
বৃষ্টি হচ্ছে..

ঠাম্মা(vo)
বৃষ্টির কারণে আমাদের জীবন থেমে গিয়েছিল । সব কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো.. বৃষ্টি আর ঝড় আমাদের জীবন তছনছ করে তুলেছিল। শুধু বৃষ্টি আর বৃষ্টি

(খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে, ঝড় হচ্ছে.. )

ঠাম্মা (vo)
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে, জলের বাঁধ ভেঙে যায় এবং আমাদের গ্রাম সাথে সাথে  আশেপাশের গ্রামগুলিতে বন্যা এসে যায়…

(গ্রাম বন্যা এসে গেছে)

ঠাম্মা (vo)
চারিদিকে শুধু চিৎকার.. 

(মানুষ, জন্তুর চিৎকার.. পুরো গ্রাম বন্যার জলে ভেসে যাচ্ছে)

মানুষজন
বাঁচাও… বাঁচাও

Cut to 

Present 
Scene-8

আলো 
তারপর, তারপর কি হলো ঠাম্মা

ঠাম্মা
তারপর,???

Cut to

Flashback 

(জয়া ছেলেকে কোল নিয়ে আছে, ছেলে কাঁদছে আর জয়া )

জয়া 
(স্বামী কে)
ও গো, শুনছো..শুনোনা.. ও গো কি হলো তোমার

(শাশুড়ি কে)
মা, ও মা ওঠো না মা… মা 

(শশুর কে)
বাবা,. ও বাবা দেখো না., মা আর আপনার ছেলে  কোন কথা বলছে না.. বাবা শুনোনা… বাবা…(কাঁদে)
এ কি হয়ে গেল….

Cut to

Present 
Scene- 9

ঠাম্মা 
আমার শ্বশুরবাড়ি, বাপের বাড়ি, সবকিছুই সেই বন্যার জলে ডুবে গেল, কেউ বেঁচে গেল আবার কেউ? শুধু আমি, খোকা আর মাত্র কয়েকজন বেঁচে ছিল। আমাদের চারপাশে মৃতদেহ ভেসে বেড়াছিল।


Cut to

Flashback 

Night 
(জয়া তার ছেলে, ও কিছু লোকজন এক জায়গায় বসে আছে, হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছে, এবং সামনে কয়েকটি দেহ পড়ে আছে)

ঠাম্মা(vo)
সেই রাতে আমরা একটি চালে রাত কাটাই, তারপর সকালে সরকারি লোকেরা এসে আমাদের তাদের সাথে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমার বাঁচার ইচ্ছে ছিল না তাই আমি..

(একটি হাসপাতালের ছুরি নিয়ে নিজেকে শেষ করতে যায় তখনি ছেলে কেঁদে ওঠে)

ছেলের কাঁন্না..

(ছুরি ছেড়ে জয়া ছেলে কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে)

জয়া
আমাকে ক্ষমা করে দে খোকা, আমাকে ক্ষমা করে দে…



Cut to

Scene -8

Present 

ঠাম্মা 
খোকার মুখ দেখে আমি নিজেকে শেষ করার সাহস পায়নি। 

আলো
কি বলো গো ঠাম্মা, তুমি নিজেকে শেষ করার চেষ্টা করে ছিলে !

ঠাম্মা
হ্যাঁ রে হ্যাঁ, কি করব বল ,তখন যে চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। 

আলো
ভাগিস, তুমি কিছু করোনি। হ্যাঁ গো ঠাম্মা তারপর তুমি কি করলে গো

ঠাম্মা
তারপর, কয়েকদিন পর, আমাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল। আমরা সরকারের কাছ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা এবং রেশন পেলাম। আমি আমার ভেঙে পড়া শ্বশুরবাড়িতে গেলাম। সেখানে গিয়ে আমি নিজেকে আটকাতে পারিনি।

Cut to
Flashback 

Scene-9

(জয়া কাঁদছে.. তখন এক বৃদ্ধ লোক আসে)

বৃদ্ধ
ও মেয়ে .. কেঁদ না, কেঁদে আর কি হবে, যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।

জয়া
কাকাবাবু,  আমাদের সাথে কেন এমন হলো ! 

বৃদ্ধ
সবই কপাল, বুঝলি মা সবই কপাল। আমার জয়ান ছেলেটা মরে গেল। ভগবান আমায় কেন নিয়ে গেল না। উফফ, এই বুড়ো বয়সে এটাও দেখার ছিল। (নিঃশ্বাস ছেড়ে) না যায়.. জঙ্গলে গিয়ে কতগুলো কাঠ নিয়ে আসি। ঘরটা কে যে ঠিক করতেই হবে, নাহলে থাকবো কি করে !

জয়া
কাকাবাবু, আমি ও আপনার সাথে যাবো ! 

বৃদ্ধ
যাবে ! অবশ্যয় তোমারও যে একই অবস্থা, না গিয়ে কোনো উপায় নেই !  ঠিক আছে চলো 

Cut to

Present 

Scene-10

ঠাম্মা 
খোকা কে পিঠে বেঁধে জঙ্গলে থেকে কাঠ নিয়ে এলাম। তারপর আমরা কাঠ আর কাদা দিয়ে যতটা সম্ভব ঘরটা মেরামত করলাম। ধীরে ধীরে জীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
অন্যদিকে, সরকারের দেওয়া টাকা এবং রেশন প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল, কি যে করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম.

আলো
ও তারপরের তুমি এই মুদি দোকানটা দিয়ে ছিলে

ঠাম্মা
না, দোকান দেওয়ার মত আমার সামর্থ কোথায় ছিল। সেই সময় শুনতে পেলাম আমাদের গ্রামে বাকি একটা ডেম তৈরি হবে এবং সেখানে কাজ করার জন্য লোকের প্রয়োজন। তাই আর বেশি না ভেবে সেখানে লেগে পড়লাম।

Cut to
Flashback 

(জয়া কাজ করছে এবং তার ছেলে তার পিঠে বাঁধা আছে)

ঠাম্মা(vo)
প্রায় এক বছর ওখানে কাজ করলাম এবং সেই সঙ্গে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে অল্প অল্প টাকা জমাতে শুরু করলাম.. তারপর সেই টাকা দিয়ে একটা মুদিখানা দোকান দিলাম। তখন খোকা সবে তিন বছর হবে, 

Cut to

Present 

আলো 
আর তারপর তুমি সেই মুদি দোকান চালিয়ে কাকা কে মানুষ করলে, কাকা বড় হয়ে কলেজে স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশে কাজ করতে গেলেন। আবার ওখানে বিদেশী মেম কে বিয়ে ও করেছেন। আর আজকে কাকা মানে তোমার ছেলে আসছে। ও ঠাম্মা কাকা যে আসার সময় হয়ে গেছে গো। যে কোন সময় এসে পড়বে ।

ঠাম্মা
কি! ভাত হয়ছে তো !

আলো
হ্যাঁ, ও আর পাঁচ মিনিটে লাগবে,। ও তুমি চিন্তা করো না

ঠাম্মা
এ মেয়ে শুধু ঢপবাজ..

(তখনি দরজায় কেও কড়া নারে)

ঠাম্মা
ওই দেখ মনে হয় খোকা চলে এসেছে ।

আলো
ঠাম্মা আমি  দেখছি ।

(আলো দরজা খোলে, দরজায় সামনে পোস্টম্যান দাঁড়িয়ে থাকে)

পোষ্টম্যান
ঠাম্মা কোথায় ?

আলো
ভেতরে আছে । কেনো ?

পোস্টেমন
ওনার ছেলের কালকে একটা চিঠি এসেছিল। মাথা থেকে একদম নেমে গেছিল, দিতেই ভুলে গেছি ।

(চিটি বের করে)

পোস্টম্যান
এই নাও ঠাম্মা কে দিই দাও ।

আলো
ঠিক আছে ।

ঠাম্মা
কি রে খোকা আসেনি ?

আলো
না গো ঠাম্মা, পোস্টম্যান এসেছিল। এই চিঠিটা দিয়ে বলল, কালকে নাকি তোমার ছেলের চিঠী টা এসেছে। ও দিতেই ভুলে গেছিল ।

ঠাম্মা
কিন্তু খোকা তো আজকে আসছে আবার চিঠি কেন?

আলো
সেতো পড়লেই বোঝা যাবে ঠাম্মা ।

ঠাম্মা
তাহলে দাঁড়িয়ে হা করে দেখছিস কি, পড় পড় তাড়াতাড়ি পড় ।

আলো
হ্যাঁ হ্যাঁ পড়ছি, উফফ কি জালা ।

(চিটি খুলে পড়ে)
( কাকা)
মা আমার প্রণাম নেবে। ভেবেছিলাম এবার বাড়ি যাবো কিন্তু হঠাৎ অফিসে কাজের চাপে এই বারও আমাকে থেকে যেতে হচ্ছে। তাই এবারও আমার আসা হবে না। মা এখন আমার অনেক.,,

ঠাম্মা
চুপ ! ব্যস আর পড়তে হবে না। 

আলো
আরে এখনো তো অনেক বাকি

ঠাম্মা
(যন্ত্রনা)
থাকুক, কি হবে পড়ে.. আমার খোকা তো আসবে না। এবারও আসছে না ! 

আলো
ঠাম্মা, দেখবে কাকা ঠিক এসে যাবে !

ঠাম্মা
(দুঃখে) আমার খোকা আজ আসছে না। আসছে না ! এই বারও আসছে না ।

(অজ্ঞান হয়ে যায়)

আলো
ঠাম্মা…

Cut to

(ঠাম্মা বিছনায় শুয়ে)

আলো
ও ঠাম্মা এখন কেমন আছো ? একটু জল দেব? ডাক্তার বাবু তোমাকে  বিশ্রাম নিতে বলেছেন । তুমি চিন্তা করনি তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে ! 

ঠাম্মা
থাক মা,.আর ভালো থাকতে ইচ্ছে নেই। এই জীবনে কত কিছু দেখলাম, কিন্তু শেষবারের মত খোকা কে দেখতে পেলাম না।

আলো 
ঠাম্মা এ  তুমি কি বলছো ?

ঠাম্মা
ঠিকই বলছি মা। আমার যে আর সময় নেই, এই আমার শেষ নিঃশ্বাস, শেষ নিঃশ্বাস..ভালো থাকিস রে মা, ভালো থা.. 

(ঠাম্মা মরে যায়)

আলো
ঠাম্মা, ও ঠাম্মা.. ঠাম্মা (কাঁদে)

Fade out 


গল্পের অ্যানিমেশন  - 


No comments

Powered by Blogger.